ভিটামিন সি এর উৎস এবং কাজ
ভিটামিন সি একটি অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার, যা কোলাজেল উৎপাদন হার প্রত্যক
শক্তিশালী করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুণে বৃদ্ধি করে। ভিটামিন সি
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শর
রকে ক্ষতিকর পদার্থ থেকে সুস্থ রাখে। যাদের মধ্যে ভিটামিন সি থাকে যেমন,
লেবু আমলকি পেঁপে ও স্ট্রবেরির মতো ফল এবং শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি
পাওয়া যায়। এখন আমরা ভিটামিন সি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো
ভিটামিন সি জাতীয় খাবার
ভিটামিন সি যেটা এসকরবিক এসিড নামে পরিচিত। ভিটামিন সি এটি শরীরের
সমস্ত টিস্যুর বিকাশ এবং ত্বক ও হাড়েকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্য
সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শরীরের একাধিক বিষয়ে কাজ করে
যেমন কোলাজেন গঠন আয়ন শোষণের ফলে হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো হয় ক্ষত নিরাময়
দাঁত রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদির মাধ্যমে শরীরকে প্রাণবন্ত রাখে ভিটামিন সি
জাতীয় খাবার সমূহ
1. পেয়ারা
আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় একটি ফলের নাম পিয়ারা। যা সচরাচর সব জায়গাতেই
পাওয়া যায়। পেয়ারা ভিটামিন সি জাতীয় খাব। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন সি থাকে। ৫০ গ্রাম পেয়ারায় প্রায় ১১৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। এই
ফলটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে এবং রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
2. কিউই
কিউইতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যদিও অনেকের কিউইতে
অ্যালার্জি থাকে বা থাকতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এলার্জি এর সম্ভাবনা কম
থাকে অর্থাৎ বেশিরভাগ লোকের এটাতে এলার্জি হয় না। ভিটামিন সি জাতীয় এই
ফলটি আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। কিউইতে প্রচুর
পরিমাণে প্রোটিন ফলেট এবং ভিটামিন কেউ সমৃদ্ধ করে। ৫০ গ্রাম কিউইতে প্রায় ৪৬
মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
3. তরমুজ
ফল এবং রস যাদের পছন্দ তারা বেশিরভাগই তরমুজকে পছন্দ করে। গ্রীষ্মকালের
সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল হচ্ছে তরমুজ। কেননা এটা একাধারে ক্ষুধা এবং তৃষ্ণা দূর করে
এবং শরীরকে করে প্রাণবন্ত ও সতেজ রাখে। এবং এটি পাচনতন্ত্র অর্থাৎ হজম হইতে
খুবই সুবিধা হয়।এই তরমুজেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। ৫০ গ্রাম তরমুজে
প্রায় ৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে। এটি পুষ্টি নিশ্চিত এবং প্রতিদিনের
খাওয়াকে সহজ করে তোলে।
4 . কলা
নিত্যদিনের সহজলভ্য এবং জনপ্রিয় ফল হচ্ছে কলা। যা সারা বছরই পাওয়া যায়।
কলা একটি ভিটামিন সি জাতীয় খাবার এটি দৈনিক গ্রহণে (RDI) প্রায় ৩৩% থাকে।
৫০ গ্রাম কলাই ৪. ৩৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। কলার একটি সুবিধা হচ্ছে
এটি গ্লাইসেমিক সূচিকে তুলনামূলক কম রাখে। তাই এটি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই আপনি
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে খাইতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃপাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
5.বেরি জাতীয় ফল যেমন স্ট্রবেরি ক্যানবেরি
বেরি জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যেমন স্ট্রবেরি
কেন ক্যানবেরি ইত্যাদি। ৫০ গ্রাম বেরিজাতীয় ফলে প্রায় ৮.৮৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি থাকে। বেড়ি জাতীয় ফল খাওয়ার খাবার ফলে, বেরি জাতীয় কোষ,
স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য, এবং শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করতে অনেকগুনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
6.পেঁপে
পেঁপেএকটি ভিটামিন সি জাতীয় খাবার। পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা
আমাদের শরীরকে সুস্থ ও প্রাণবন্ত করে। সারা বছরই প্রচুর পরিমাণে পেপে পাওয়া যা।
৫০ গ্রাম পেতে প্রায় ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। এটি আপনার শরীরকে বলিষ্ঠ
প্রাপ্তি সাহায্য করে এছাড়াও আপনাকে সুস্থ এবং সক্রিয় রাখতে এবং হৃদরোগের ঝুকি
কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
7. আম
ফলের রাজা,সুমিষ্ট জনপ্রিয় ফল হইল আম যা গ্রীষ্মকালকে প্রাণবন্ত করে। আমি
দুই-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত ভিটামিন সি থাকি ৫০ গ্রাম আমি প্রায় ১৮.২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি থাকে। এটি শরীরের ক্লোজেন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ত্বক ও হার এবং হার্টের
স্বাস্থ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য
কমাতেও সাহায্য করে।
এছাড়াও অনেক ফলেই ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
- মরিচ
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। মরিচে -১২৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি
থাকে। এটি আপনি বিভিন্ন খাবার তৈরিতে ব্যবহার করে থাকেন। যা খাওয়ারের স্বাদ
কয়েক গুনে বৃদ্ধি করে এছাড়াও এদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী তবে তা সীমিত
পরিমাণে খাওয়ার উচিত
2. টমেটো
টমেটো একটি ভিটামিন সি জাতীয় খাবার এতে পটাশিয়াম ভালো পরিমাণে থাকে। টমেটো
সাধারণত আপনি সালাত করে কিংবা তরকারিতে এছাড়াও আপনি আপনার মত করে খাইতে পারেন।
৫০ গ্রাম টমেটোতে প্রায় 6.85 মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে যা অন্যান্য শাকসবজি
তুলনায় অনেক বেশি।
3. ফুলকপি, বাঁধাকপি
ফুলকপি এবং বাঁধাকপিতেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এটি সাধারণত
শীতকালের সবজি। প্রতি ৫০ গ্রাম ফুলকপিতে প্রায় 24.1 মিলিগ্রাম ভিটামিন সি
থাকে এবং ৫০ গ্রাম বাঁধাকপিতে প্রায় ১৮.৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। ডায়েট
করার সময় আপনি ঘন ঘন বাঁধাকপি খাইতে পারেন।
এছাড়াও অনেক সবজিতেই ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
ভিটামিন সি এর অভাবে কি হয়
ভিটামিন সি এর অভাবে স্কার্ভি রোগ হয়। এছাড়াও শরীর দুর্বলতা ,মাড়িতে
রক্তপাত ,দাঁতের ক্ষয্, ত্বকের সমস্যা, কালশিটে বা রক্তপাত হওয়া
জয়েন্টের ব্যথা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া এর অন্যতম লক্ষণ।
ভিটামিন সি এর অভাবে সাধারণত লক্ষণ সমূহ
-
ক্লান্তি ও দুর্বলতাঃ ভিটামিন সি-এর অভাবে শরীর দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভূত
হয়
-
মাড়ির সমস্যাঃমাটিতে ঘা মারি ফুলে যাওয়া এবং অনেক সময় দাঁতের সমস্যাও দেখা
দিতে পারে
-
ত্বকের সমস্যাঃ ত্বক সহজেই রক্তপাত ও কালসিটে পড়ে যেতে পারে। ত্বক
নিস্তেজ ও প্রাণহীন হয়ে যেতে পারে।
-
ক্ষত সারিয়ে দেয়ঃছোটখাটো আঘাত ও ক্ষত সারাতে অনেক সময় লাগে।
-
হাড়ের সমস্যাঃ কোলেজেন উৎপাদনে বাঁধার কারণে অনেক সময় হাড় ভাঙ্গুর হয়ে
যেতে পারে ও জয়েন্ট ব্যথা হতে পারে
- রক্তস্বল্পতাঃ ভিটামিন সি-এর অভাবে লোহিত রক্তের রক্ত কণিকার সংখ্যা অনেক গুণে কমে যেতে পারে।
ভিটামিন সি এর উপকারিতা
ভিটামিন সি এটি এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে সংক্রমণ এবং কোষ ক্ষয় রোধে সহায়ক
ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও কো এনজাইম হিসেবে ভিটামিন সি ক্ষত সারিয়ে তোলে
ও ঔষধ এব কোস্টরল বিপাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অত্যাবশকীয়
নিউট্রিয়েন্ট ভিটামিন সি চুল এবং সুস্থ সবল রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়ায়। এছাড়াও সামগ্রিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে থাকে।
ভিটামিন সি এর সিরাম হলো একটি স্কিন কেয়ার পণ্য। যা ত্বকের উজ্জ্বলতা
বৃদ্ধি, বরণের টাক কমানো, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এছাড়াও এটি বার্ধক্য বিরোধী গুণাবলির জন্য বেশ পরিচিত এবং ত্বকের বিভিন্ন
সমস্যার সমাধানের জন্য, দীর্ঘস্থায়ী ভূমিকা পালন করে।
এছাড়াও ভিটামিন সি সিরাম ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, দাগ ও পিগমেন্টেশন কমান্
ক্লোজেন উৎপাদনের বৃদ্ধি,ত্বকের ছিদ্র পরিষ্কার রাখা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ
কাজে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দিয়ে থাকে।
ভিটামিন সি সিরাম এর দাম এবং ব্যবহার
সর্বপ্রথম মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে তারপর ভিটামিন সি সিরাম 23 ফুটা নিয়ে
আলতো ভাবে মুখ ও গলায় লাগাতে হবে এরপর হালকাভাবে মেসেজ করতে হবে
এবং ব্যবহারের পরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
- মুখ পরিষ্কার করুন প্রথমে আপনার মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
- সিরাম নিন হাতির তালুতে বা কর্টন প্যাডের 23 ফোঁটা সিরাম নিতে হবে।
-
প্রয়োগ করুন আলতো ভাবে পুরো মুখে এবং চোখের চারপাশে অংশে ভালোভাবে লাগাতে
হবে।
-
মেসেজ করুন হালকাভাবে মেসেজ করতে হবে।
- ময়েশ্চারাইজার লাগান সিরাম লাগানোর পর ত্বককে আগ্রহ রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ভালোভাবে ব্যবহার করতে হবে।
ভিটামিন সি সিরাম এর দাম
বাংলাদেশের ভিটামিন সি সিরামের দামের ভিন্নতা রয়েছে তবে সাধারণত ১৫ মিলিমিটার
সিরামের দাম ৪৫০ থেকে ৪৬৮ টাকা। এবং সিরাম ক্রিমের দাম ২৪০ টাকা থেকে শুরু
করে বিভিন্ন দামের হইতে পারে।
শেষে কিছু কথা
আপনার পরিবারকে এবং আপনি নিজেই সুস্থ থাকার জন্য ভিটামিন সি এর গুরুত্ব অপরিসীম।
এটি একদিকে যেমন আপনার শরীরকে সতেজ ও সুস্থ রাখে ঠিক তেমনি ত্বকের ব্যবহারেও এর
কার্যকারী প্রভাব অনেক বেশি। তাই আমাদের খাবারের সূচিতে প্রতিদিন ভিটামিন সি
জাতীয় খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর... এতে করে আমাদের স্বাস্থ্য মন সবকিছুই
ভালো থাকবে। তাই আজ থেকে আমরা প্রতিজ্ঞা করি প্রতিদিন ভিটামিন সি জাতীয় খাবার
খাব এবং সুস্থ থাকব ইনশাআল্লাহ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url